সকালে খালি পেটে লেবু গরম পানি খাওয়ার অপকারিতা
সকালে খালি পেটে লেবু গরম পানি খাওয়ার অপকারিতা কি কি তা সম্পর্কে আজকে আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন। লেবু ও গরম পানি কতটুকু পরিমাণ খেতে পারবেন এবং কতটুকু পরিমাণ খেতে পারবেন না তা সম্পর্কে আজকে জানবেন। এবং লেবু ও গরম পানি খেলে কোন কোন ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন এই সবগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
পেইজ সূচিপত্রঃ লেবু গরম পানি খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে
- সকালে ঘুম থেকে উঠে লেবু গরম পানি খাওয়া যাবে কিনা
- লেবুতে যে সব ধরনের উপাদান থাকে
- লেবুতে রয়েছে টাইম আইনিক এসিড
- লেবুর খোসা খেলে কিডনিতে পাথর হয়
- বেশি লেবুর রস খেলে পাকস্থলী সমস্যা
- লেবুর রসের কারণে মুখের সমস্যা
- অতিরিক্ত গরম পানি খাবার অপকারিতা
- লেখক এর শেষ কথা
সকালে ঘুম থেকে উঠে লেবু গরম পানি খাওয়া যাবে কিনা
সকালে আপনি যখন ঘুম থেকে উঠবেন তাৎক্ষণিক কুসুম কুসুম গরম পানি অথবা অতিরিক্ত
গরম পানি লেবুর সাথে মিশিয়ে না খেলে আপনার ভালো হবে। যদি কুসুম কুসুম গরম পানি
অথবা অনেক বেশি গরম এইরকম পানির সাথে সকাল বেলা উঠে লেবুর রস মিশিয়ে আপনি খান।
তাহলে আপনার বমি বমি ভাব হতে পারে। কারণ সকাল বেলা আপনি যখন খালি পেটে কুসুম
গরম পানি অথবা লেবু খান তাহলে আপনার পেটে জ্বালাপোড়া বিভিন্ন ধরনের সমস্যার
সম্মুখীন হতে পারেন।
লেবুতে যে সব ধরনের উপাদান থাকে
লেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ফরফরাস এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন বি ফলিক এসিড
ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম রয়েছে। লেবুতে থাকা এই উপাদান গুলো স্বাস্থ্যের জন্য
খুবই ভালো তবে এর একটি খারাপ দিক রয়েছে। খালি পেটে লেবু পানি পান করলে অথবা
অতিরিক্ত পরিমাণ লেবু পানি যদি পান করা যায়। তাহলে আপনার বিভিন্ন রকম সমস্যার
সম্মুখীন হতে পারেন।
লেবুর এক দিক দিয়ে যেমন উপকারিতা রয়েছে এমন আরেক
দিক দিয়ে অপকারিতা ও রয়েছে।আপনার শরীরের জন্য যতোটুকু লেবু পানি খেলে নানান ধরনের সমস্যা হবে না ঠিক
ততটুকু পরিমাণ লেবু আপনি খেতে পারেন। কিন্তু তার অধিক বেশি খেলে আপনার
নানান রকম সমস্যা সম্মুখীন হতে হবে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা
প্যাট্রিক আলসার অতিরিক্ত লেবু রস পান করলে
প্যাট্রিক অথবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এবং পরিপাকতন্ত্রে
ঘা দেখা দিতে পারে।যদি আপনি অতিরিক্ত লেবু রস পান করে থাকেন। তাহলে আপনার
প্রস্তাবের সমস্যা হতে পারে স্বাভাবিকভাবে আপনার যে প্রতিনিয়ত এক ঘন্টা পাঁচ
ঘন্টা পর প্রস্তাব হত। এই সমস্যাটি বেড়ে যাবে অর্থাৎ সহজ ভাষায় যদি বলা যায় তাহলে আপনার এক ঘন্টার
মধ্যে তিন থেকে চার বার প্রস্তাব হতে পারে। আর এটি হওয়ার একমাত্র
কারণ হচ্ছে আপনার অধিক পরিমাণ লেবুর রস পান করা।
লেবুতে রয়েছে টাইম আইনিক এসিড
লেবুতে রয়েছে টাইমাইট এসিড আপনি যদি অনেক বেশি মাত্রায় লেবুর রস খেয়ে
থাকে। তাহলে আপনার শরীরে টাইমাইট এসিডের মাত্রা অনেক বেড়ে যাবে। এবং সোজা
আপনার মাথায় গিয়ে আঘাত করবে এতে আপনার মাথা ঘোরা অথবা মাথার পিছনে গরম
হয়ে যাবে। এবং আপনার মাথায় প্রচুর পরিমাণ রক্তচাপ বেড়ে যাবে এতে আপনি
খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়বেন। এবং আপনার শরীর নিস্তব্ধ হয়ে যাবে এটি খুব
মারাত্মকভাবে আপনার মাথায় আঘাত করতে পারে। তাই যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই
লেবুর রস পান করুন এতে আপনার শরীরের কোন ক্ষতি হবে না।
লেবুর খোসা খেলে কিডনিতে পাথর হয়
আপনি যদি রান্না করা কোনো কিছুর সাথে লেবুর খোসা খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার
কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। এমনকি পাথর হয়েও যেতে
পারে এখন প্রশ্ন আসতে পারে লেবুর খোসা খেলে কেন কিডনিতে পাথর হবে। এতে বলা
যায় লেবুতে প্রচুর পরিমাণ আলসারেট আর এই আলসারেট আপনার শরীরের
কিডনিতে পাথর জমাতে অতি উত্তম।
তাই কিডনিতে পাথর না জমাতে চাইলে লেবুর খোসা
খাওয়া বাদ দিতে হবে। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী আপনি লেবুর রস খেতে পারেন। যেটা
আপনার শরীরের যতটুকু প্রয়োজন এর বেশি খাওয়া যাবেনা।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা
বেশি লেবুর রস খেলে পাকস্থলী সমস্যা
আপনি যদি অনেক বেশি পরিমাণ লেবুর রস খেয়ে থাকেন সেই ক্ষেত্রে আপনার পাকস্থলীতে
সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ পাকস্থলী জায়গাটুকু অনেকটা হালকা প্রকৃতির হয়ে
থাকে। এতে যদি আপনি অনেক বেশি পরিমাণ লেবুর রস খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার
পাকস্থলীতে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ লেবুর রসে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণ ভিটামিন সি ক্যালোরি এবং ইত্যাদি গুণসম্পন্ন।
এবং রয়েছে এসিড আর এই এসিড যদি অনেক বেশি পরিমাণ এ পাকস্থলীতে জমাট হয়।
তাহলে আপনার পাকস্থলী পুড়ে যাওয়া অথবা সেখানে ঘা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি
থাকে। তাই লেবুর রস আপনার শরীরের যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু পান করবেন। এতে
আপনার পাকস্থলী কোন সমস্যার সম্মুখীন হবে না।
লেবুর রসের কারণে মুখের সমস্যা
আপনি যদি প্রচুর পরিমাণ লেবুর রস খান তাহলে আপনার মুখের সমস্যা হতে পারে।
সমস্যা যে কোন ধরনের হতে পারে প্রথমত বলা যায় আপনার মুখের স্কিন। এটা পড়ে
যেতে পারে কারণ লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সাইট্রিক এসিড। এই
সাইট্রিক এসিড যখন কোন নরম অথবা পাতলা পোলেপ স্পর্শ করে। তখন এটি ক্রমাগত
ওই স্তরকে প্রচুর পরিমাণ হিট প্রদান করে। এই ক্ষেত্রে আপনার ঠোঁট পুড়ে যাওয়া
সম্ভাবনা বেশি থাকে।
এই সাইট্রিক এসিড যদি প্রচুর পরিমাণ আপনার মুখে আঘাত করে এই ক্ষেত্রে
আপনার দাঁতে সমস্যা হতে পারেঠ। আপনার দাঁত সাইট্রিক এসিড মিলিত হওয়ার সাথে
সাথে এটি রিয়েকশন অনেক বেশি হয় এক্ষেত্রে আপনার দাঁতে ছিদ্র অথবা মরিচা মতন
সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ক্ষেত্রে আপনার দাঁত অকেজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা
অনেকটা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত পরিমাণ লেবু পানির পান করা থেকে বিরত থাকুন।
আরো পড়ুনঃ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য করনীয়
অতিরিক্ত গরম পানি খাবার অপকারিতা
আপনি যদি প্রতিনিয়ত প্রচন্ড গরম পানি খেয়ে থাকেন এক্ষেত্রে আপনার মুখের ভিতরে
জিব্বা অথবা আপনার গালের দুই সাইডে যে নরম অংশটুকু আছে এগুলো পুড়ে যাওয়া
সম্ভাবনা অনেকটা বেশি থাকে। এবং আপনার গলাও পুড়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি
থাকে। এই ক্ষেত্রে অনেক বেশি গরম পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
যদি গরম
পানি খেয়ে আপনার জিব্বা গালতি অথবা গলা যে কোন রকম সমস্যা হয়ে যায়।এক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া অনেকটা কষ্টকর। কারণ
যখন আপনার মুখে গরম পানি খাওয়ার ফলে মুখের ভিতরে পুড়ে যায় অথবা বিভিন্ন রকম
সমস্যা হয়ে যায়।এই ক্ষেত্রে এরকম ঘা শুকানো অথব মুখের পুড়ে
যাওয়া অংশটুকু শুকানোর জন্য যে শুষ্ক বাতাস টুকু প্রয়োজন এটি আপনার মুখে
সঠিকভাবে পৌঁছাতে পারেনা। কারণ আপনার মুখের ভেতরে যে লালা রয়েছে এতে আপনার মুখ
প্রায় সময় ভিজে থাকবে।
এই ক্ষেত্রে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া খুবই কঠিন। তাই হালকা কুসুম
কুসুম গরম পানি আপনি খেতে পারেন। কিন্তু অনেক বেশি গরম হলে সেটি কিছুক্ষণ রেখে
যখন কুসুম কুসুম গরম হবে হালকা ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন আপনি এটি পান করতে পারেন।
তাহলে আপনার এরকম সমস্যা থেকে বিরত থাকতে পারবেন। তাই সব সময় গরম পানি খেলে
হালকা কুসুম কুসুম গরম পানি খাবার চেষ্টা করবেন।
আরো পড়ুনঃ হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
লেখক এর র্শেষ কথা: সকালে খালি পেটে লেবু গরম পানি খাওয়ার অপকারিতা
উপরের অংশটুকু পড়ে আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন গরম পানি অথবা প্রচুর পরিমাণ
লেবুর রস খেলে কোন কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সব সময় বেশি গরম পানি
খাওয়া থেকে নিজেকে একদম বিরত রাখবেন। এতে করে আপনার নানান রকম সমস্যা থেকে
আপনি বিরত থাকবেন। প্রচুর পরিমাণ লেবুর রস খাওয়া থেকেও বিরত থাকবেন। এতে করে
আপনার শরীরের বিভিন্ন রকম সমস্যা থেকে বিরত থাকতে পারবেন। সব সময় মনে রাখবেন
আপনার যতটুকু প্রয়োজন আপনার শরীরের যতটুকু লেবু রস অথবা গরম পানি প্রয়োজন ঠিক
ততটুকু পরিমাণ লেবুর রস এবং কুসুম কুসুম গরম পানি আপনি খেতে পারেন। এতে করে
আপনার শরীরের সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পাবেন এবং লেবুর রস এবং গরম পানির
ক্ষতিকর দিক থেকে আপনি নিজেক নিজের শরীরকে রক্ষা করতে পারবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url